লবদল করতে চাইছেন কানাইয়া কুমার? এ নিয়ে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে বিহার রাজ্যে। কি হলো হাইপ্রোফাইল জল্পনার নেপথ্যে রয়েছে দুটি কারণ। কুতুব কি হলো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ, জোট সরকারের মন্ত্রী অশোক চৌধুরীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ। দ্বিতীয় কারণটি নিজের দলে ক্রমাগত গুরুত্ব কমতে থাকা। রবিবারের এই সাক্ষাৎ ঘিরে বিহারে বিজেপি এবং জেডিইউর মধ্যে মতপার্থক্য বেড়ে গিয়েছে।

মিতুর ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীর সঙ্গে কেন কানাইয়া কুমার দেখা করলেন, তাদের মধ্যে কি কি কথা হতে পারে, তা নিয়ে দু'জনের কেউই সেভাবে মুখ খোলেননি ‌। অশোক চৌধুরী বলেছেন, 'নেহাত সৌজন্য সাক্ষাৎ। রাজনীতির কোনো বিষয় নয়। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা পরিচিত।'কানাইয়া পুরোপুরি নিরব। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে এই নিরবতা জল্পনায় আরো ইন্ধন জুগিয়েছে। রবিবারের বৈঠকটি মোটেই ভালোভাবে নেয়নি বিজেপি। বিহারের জোট সরকারের বিজেপি কোটার প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'জেএনইউ ছাত্রসংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি সঙ্গে জোট সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের এমন বৈঠক মোটেই ঠিক জিনিস নয়।' শরিফের এমন আপত্তি সত্ত্বেও জেডিইউর মুখপাত্র অজয় অলোক বলেছেন,'কানাইয়া যদি তার বিকৃত আদর্শ ত্যাগ করতে পারেন, তাহলে তিনি আমাদের দলে স্বাগত।'তথাকথিত 'টুকরে টুকরে গ্যাংয়ছর'এক নেতা শরিক দল এসে যোগ দিলে জোটের ভবিষ্যৎ কি হবে, তা নিয়ে জাতীয়তাবাদী বিজেপির নেতৃত্ব ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে বলে খবর। দলের নেতৃত্ব পুরো বিষয়টির উপর নজর রেখেছেন বলে বিজিবি সূত্রে খবর।

কিন্তু দল নিয়ে কানাইয়া যে চাপে রয়েছেন, বিহার রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল দের অনেকেই বলেছেন। দলের সঙ্গে কানাইয়ার বহুমুখী সমস্যা শুরু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ছাত্র রাজনীতি থেকে ২০১৯ সালে বৃহত্তর রাজনীতির আঙিনায় পা রাখেন সিবিআই-এর আগমার্কা নেতা। বিহারের বেগুসারাই থেকে প্রার্থী হন। কিন্তু বিজেপির গিরিরাজ সিং এর কাছে হারেন।এই হার নিয়ে কানাইয়ার ক্ষোভ রয়েছে RJP এর প্রধান তেজস্বী যাদব এর উপর। কেননা বেগুসারাই এ কানাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন তেজস্বী। প্রায় 2 লক্ষ ভোট কিটে নিয়ে যান তিনি প্রার্থী তানভির হাসান। অতএব গতবছর বিহারের বিধানসভা ভোটে 
পাঁচ দলের 'মহাগটবন্ধনের' অবিসংবাদী নেতা হিসাবে সিপিআই যখন তেজস্বী কে থেকে মেনে নেয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই কানাইয়ার তা পছন্দ হয়নি। কৃষির সঙ্গে কোনো রকম সমঝোতায় যাননি তিনি। কিন্তু সিপিআইএমের একাংশের বক্তব্য এসব সবই লোক দেখানো। কানাইয়া গত প্রায় বছরখানেক ধরে বিজেপি বা জেডিইউর বিরুদ্ধে সেভাবে গলা চড়াননি। যে আগুন বুকে তার জন্য তিনি বিখ্যাত, তা অনেক ক্ষেত্রেই বিলীন হয়ে গিয়েছে বলেই দলের একাংশের ক্ষোভ।

আর এই সম্পর্কের তিক্ততা হয় গত বছরের ১ লা ডিসেম্বর। সিপিআইয়ের হায়দ্রাবাদ শাখা অফিস সচিব ইন্দুভূষণ পাটনা সফরে আসেন। অভিযোগ কানাইয়া তখন তার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছিলেন।ইন্দুভূষণ এর অভিযোগ পেয়ে হায়দ্রাবাদ সিপিআই কানাই এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ এর জন্য প্রস্তাব পাস করেন। শুধু তাই নয় বাম ছাত্র দের একাংশের সঙ্গেওসম্প্রতি বেড়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট অনেকের। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দের অভিযোগ, অর্থনৈতিক সংকট, একসময়ের কম রেট উমর খালিদের গ্রেপ্তারি, সমাজকর্মীদের গ্রেপ্তারি,কৃষক আন্দোলন বিভিন্ন বিষয়ে টুইট করলেও কানাইয়া সেই আগুনে মেজাজে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। হাজারো অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি দিল্লি কৃষক আন্দোলনের জাননি। অথচ তার সংগঠনের অনেকেই সেখানে গিয়েছিলেন।এসবের উপর রবিবার সাক্ষাৎ টিভিতে জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলেছে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন